একটা সময় ছিলো,ছোট্ট একটা সুতার প্রয়োজন হলেও সে সুতা টা আমার আম্মু আমাকে কিনে দিতো,আমার মনে পড়ে না আমি কখনো নিজের জন্য বিয়ের আগে একটা জিনিস কিনেছি। আমার সবকিছুই আমার আম্মু আব্বু কিনে দিতে আমি কখনো বাজারে গিয়ে বাজার করিনি। কখনোই না, বান্ধবীদের সাথে মিশলেও কখনো নিজের কি বা অন্য কারো কিছু কিনি নাই,হয়তো খুব একটা বেশি দিনের কথা না এইতো ৫ , ৭ বছরের আগের কথা ।
আমার আব্বু বিদেশে থাকতেন সে ক্ষেত্রে কেনাকাটা আমার আম্মু করতেন সবকিছু বাজার থেকে শুরু করে আমাদের পড়ালেখার সবকিছু সে দেখতো।। কখনো কিছু কেনার কথা যদি আমার আম্মু বলতো আমি এক বাক্যে না বলে দিতাম আমি পারবো না,কারণ সত্যি কথা বলতে আমার খুব লজ্জা লাগতো, বাজার কি ভাবে করবো দোকান দারের কাছে গিয়ে আমি কিভাবে চাইবো।
আর সেই আমি এখন কত পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে,শ্বশুর বাড়িতে এসে নিজের কাঁধে সংসারের সব দায়িত্ব আসার কারণে, আমি এখন সব শিখে গিয়েছি সময় মানুষকে কত কিছু শেখায়, মাঝেমধ্যে নিজেকে দেখে নিজেই অবাক হই,,,আজকে গিয়েছিলাম কোটালীপাড়া কিছু কেনাকাটা করার উদ্দেশ্যে, তার পাশাপাশি একটা কাজ ছিলো,আজ আমি একাই গিয়েছিলাম শাশুড়ি আম্মার কাছে বাবু কে রেখে,,
আমি যখন বেরিয়ে ছিলাম তখন প্রায় ৯ টা বাজে, সকালে খাওয়া দাওয়া করে বাবুকে ঘুম পাড়িয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম, বাসা থেকে বের হয়ে দেখি একটা অটো আছে দাঁড়িয়ে তাই আর খুব দেরি না করে উঠে পড়েছি। এর পরে প্রথমে বাজারে গিয়ে আমি আমার কাজটা সম্পন্ন করি।
এরপরে গিয়েছিলাম একটা কসমেটিকের দোকানে, বেশ কিছুদিন হয়েছে আমার ফেসওয়াশ টা শেষ হয়ে গিয়েছে আনবো আনবো করে আনাই হয় না। তাই একটা ফেসওয়াশ নিলাম, এরপরে মেয়ের জন্য একটা সানগ্লাস নিলাম কারণ, ওর সানগ্লাস টা ভেঙ্গে গিয়েছে বাহিরে বের হলে দরকার পড়ে। তাই আমি এইটা নিলাম এর সাথে দুইটা ব্যান্ড ফ্রি 180 টাকা নিয়েছে।
কসমেটিকসের দোকানে গেলে যেটা দেখি সেটাই নিতে মনে চায়। তবে এগুলা খুব একটা পড়া হয় না, তাই খুব একটা কিছু কিনলাম না। এরপরে একটা মুদির দোকানে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে কিছু শুকনা বাজার করেছি।
এরপরে একটা মিষ্টির দোকানে গেলাম,ভেবে ছিলাম শুধু দই নিবো তবে, মিষ্টির দোকানে গিয়ে এত সুন্দর মিষ্টি দেখার পরে কি না কিনে থাকা যায়। এরপর আমার শাশুড়ি আম্মার পছন্দের লাল মোহন মিষ্টি কিনে নিলাম, তিনি এই মিষ্টিটা খেতে ভীষণ পছন্দ করে,, পরিবারের বড় বউ আমি মাথার উপরে অনেক দায়িত্ব রাখতে হয়, কে কোনটা খেতে বেশ পছন্দ করে অপছন্দ করে,এসব মাথায় রেখে কাজ করতে হয়।
আর তাছাড়া শাশুড়ি আম্মা বলে কথা,,আমার কাছে মনে হয় ভালোবাসা পাওয়ার আগে ভালোবাসা দিতে হয়। এরপরে মেয়ের জন্য দই নিলাম । এসব কেনাকাটা করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই ,কারণ মনের ভিতরে একটা কথাই চলছিল বাবুকে রেখে এসেছি ।
এরপরে বারোটার ভিতরে বাসায় চলে আসে, বাসায় এসে না খুব কষ্ট হচ্ছিলো কারণ, বাহির থেকে আসার পর হঠাৎ করে মাথা ব্যথা হচ্ছিলো,কিন্তুু,কিন্তুু টা কি জানেন এত বেশি কষ্ট হয়েছে, বাহির থেকে এসেছি সবকিছু গুছিয়ে রাখলাম। এরপরে টিউবলের কাছে গিয়ে দেখি আমার শাশুড়ি আম্মা আমার মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য এক বালতি জামা কাপড় ভিজিয়ে রেখেছে।
আচ্ছা বলুন তো, এত কষ্ট করার পরে এইটা দেখলে কি মাথা ঠান্ডা থাকে, কিন্তুু কিচ্ছু করার নেই , মাথা টা কে ঠান্ডা রেখে এক বালতি জামা কাপড় কেচে ধুয়ে পরিষ্কার করে রোদে শুকাতে দিলাম।ঐ যে কথা তো আগেই বলে রেখেছি, ভালোবাসা পেতে হলে আগে ভালোবাসা দিতে হয়,তাই তার কাজ দেখে মাথা ঠান্ডা সব সময় রাখতে হবে মনকে এটাই বুঝিয়ে নিলাম।
যদিও আমার শাশুড়ি আম্মা খুবই ভালো, খুবই ভালো তবে, মাঝে মধ্যে এদিক সেদিক হয়ে যায়। এটা কোন ব্যাপার না কারণ, আমি নিজেই একজন রাগী মানুষ, হুটহাট রেগে যাই তবে, জানেন আমার মনটা বড্ড সরল😀 আমি কখনো কারো উপরে রাগ হয়ে বেশিক্ষণ থাকতে পারিনা।যাক নিজের কথা নিজেই বলে দিলাম।
যাইহোক, যেখানে ছিলাম আর কি, আজকে বাহিরে গিয়েছিলাম দেখতে পেলেন কি কি কেনাকাটা করেছে, সংসারের জন্য, বাচ্চার জন্য, শাশুড়ি আম্মার জন্য, কেনাকাটা করে বাড়িতে ফিরলাম এইতো আজকের দিনের অর্ধেকটার সময় আমার বাহিরে কেটে গিয়েছে। সবাই ভালো থাকবেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
জীবনের প্রয়োজনে আমাদেরকে সব সময়ই বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করতে হয়। আজকে আপনে আপনার পরিবার এবং নিজের জন্য কেনাকাটার মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আসলে আমরা আমাদের পরিবারকে নিয়েই বেচে থাকি। এজন্য যত যায় কিছু হয়ে যাক না কেন তাদের কথা সব সময় ভাবতে হয়।
পোষ্টটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit