কামদা একাদশীতে কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে অনুষ্ঠিত বারোদোল মেলার সম্বন্ধে কিছু কথা

in hive-120823 •  3 months ago  (edited)

কৃষ্ণনগরের বিশেষ ঐতিহ্যপূর্ণ দিন হিসাবে পরিগণিত চৈত্রের শুক্লো একাদশী তিথি । এই তিথি কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ী তথা শ্রী কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজ প্রাসাদে এক বিশেষ পূজা ও সেই পূজা উপলক্ষে এক বিরাট মেলার আয়োজন হয় রাজবাড়ী প্রাঙ্গণে। বহু পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী এই মেলাটি বারো দলের মেলা নামে পরিচিত। ফাল্গুন মাসের শুক্লো একাদশী তিথিতে কৃষ্ণনগরের নিকটবর্তী অগ্রদীপে গোপীনাথের মেলা আয়োজিত হয়। আর্থিক এই মেলার একমাস পর গোপীনাথ অগ্রদীপ থেকে আগমন করেন কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতে। এখানে তিনি অবস্থান করেন তিন দিন। এই তিন দিনে তার সাজ রাজ বেশ, রাখাল বেশ ও ফুলবেশ নামে পরিচিত। এই তিন দিনে কৃষ্ণনগর এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকেও বহু মানুষের আগমন ঘটে কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে। রাজবাড়ীর কুলো দেবতাদের নিয়ে আসা হয় রাজবাড়ীর পূজা প্রাঙ্গণে। আর এই তিনদিন রাজবাড়ীর পূজা প্রাঙ্গণ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে সকলেই এই তিনদিন রাজবাড়ীর কুলো দেবতাদের পূজা দেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন।

IMG_20250408_233157.jpg

ভোর ছটা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত ও বিকেল চারটে থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এই প্রাঙ্গণের দ্বার উন্মুক্ত থাকে। কৃষ্ণনগর বাসীরা, ছোট থেকে বড় পর্যন্ত সকলে শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন রূপের দর্শন করতে যান কৃষ্ণনগরের রাজ প্রাঙ্গণে। সঙ্গে সকলেই দেবতার উদ্দেশ্যে নিয়ে যান আবির ফুল ও প্রণামী। এই দিন এই তিন দিন রাজবাড়ীর কুলো দেবতার দর্শন হলেও এই বারো দলের মেলা প্রায় একমাস ধরে চলে।

আমরা সকলেই জানি মেলা মানে মিলন ক্ষেত্র। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ যখন কোন একটি স্থানে নিজেদের আনন্দ বিনিময়ের উদ্দেশ্যে মিলিত হয় তখনই তৈরি হয় একটি মেলার পরিবেশ। আর এই মেলা যখন কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে হয় তখন তা আরো বিস্তৃত আকার ধারণ করে।

IMG_20250408_233244.jpg

কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির কুলো দেবতা সারা বছর রাজপ্রাসাদের অবস্থান করেন এবং এই বিশেষ তিথিতে তিনি কৃষ্ণনগরের সকল প্রজাদের মনস্কামনা পূরণ ও দর্শন দেওয়ার জন্য অবস্থান করেন কৃষ্ণনগরের রাজ পূজা প্রাঙ্গণে। আর এই সময় কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির প্রাঙ্গণ সকল কৃষ্ণনগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত থাকে।

আজ কামদা একাদশী তে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে রাজ বেশে অবস্থান করেন। তার সাথে এই তিনদিন থাকেন বহু সাধু সন্ন্যাসী। যাদের দর্শনে ও সেবায় মানুষ নিজেদের কৃতার্থ করে থাকেন। শুধুমাত্র কৃষ্ণনগরের মানুষের কাছে এই বারদলের মেলা বিশেষ স্থান অধিকার করে নেই। কৃষ্ণনগরের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও মানুষ এই মেলায় আসেন বিশেষ করে রাজবাড়ীর কুলো দেবতা অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন রূপের দর্শন করতে মানুষ আগ্রহের সঙ্গে এখানে আগমন করেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

এই বিষয়গুলো আমার কাছে আসলে অনেকটাই অন্যরকম ভাবে আমি গ্রহণ করে থাকি তবে মেলার বিষয়টা আমার কাছে একটু ভালো লাগে আজকে আপনি বারো দল মেলা সম্পর্কে আমাদের সাথে আলোচনা করেছেন যেটা দেখে আসলে বেশ ভালই লাগছে অজানা বিষয়গুলো জানার আগ্রহটা অনেক বেশি থাকাটা প্রয়োজন অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।