আমরা বিশিষ্ট ব্যক্তি বলতে বোঝায় , উচ্চশিক্ষিত সমাজের যারা বৃত্তিশীল এবং ও উচ্চপদস্থ কর্মের সাথে যুক্ত এমন মানুষদের। কিন্তু একবারও কি আমরা ভেবে দেখেছি এইসব মানুষদের কি আমরা সব সময় আমাদের পাশে পাই? নাকি যেসব মানুষগুলো সব সময় আমাদের বিপদে আপদে আমাদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন তারাই বিশিষ্ট বলে পরিগণিত হয়?
নবদ্বীপ মহাশ্মশানে যারা সন্দেহ সৎকার করেন
আমি মনে করি সমাজে বিশিষ্ট ব্যক্তি তারাই যারা সর্বদা নিজেদের কথা না ভেবে সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের প্রত্যেকটি মানুষের সেবায় নিজেদের নিযুক্ত করেন। তারা না থাকলে হয়তো এই সমাজে থাকাটাই কঠিন হয়ে উঠতো। সমাজটা তৈরি হতো একটা আবর্জনার স্তুপে।
সকালবেলা যারা ঘুম থেকে উঠে আপনার আমার বাড়ির সামনে এসে আমাদের বাড়ির ময়লা আবর্জনা নিয়ে গিয়ে আমাদের বাড়ি পরিষ্কার করে রেখে যায়। আমাদের বাড়ির যিনি পরিচারিকা যিনি আমাদের বাড়ির সকল কাজ সম্পাদন করে আমাদের স্বস্তি দেন এবং একদিন যিনি না আসলে আমরা চোখে অন্ধকার দেখি। আবার আমাদের বাড়ির পায়খানার চেম্বার ভরে গেলে যে বা যারা এসে সেই চেম্বার পরিষ্কার করে দিয়ে যায়। মৃত্যু জীবনের শেষ পরিণতি, মৃত্যু ঘটলে যারা আমাদের শবদেহ সৎকার করে। যারা অসুস্থ ব্যক্তিকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চব্বিশ ঘন্টা সেবায় নিয়োজিত থাকে অর্থাৎ অ্যাম্বুলেন্স চালক ।
অ্যাম্বুলেন্স চালকক
সমাজের কোন মানুষ যদি এই কাজ গুলির না করতো তাহলে কি হতো একবার ভাবুন আমাদের সমাজের। আমরা সকলেই অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। এবং অনেক আভিজাত্যপূর্ণ জীবন যাপন করে থাকি। কিন্তু আমরা ভুলে যাই আমাদের এই জীবন যাপনের কেন্দ্রবিন্দুতে যারা রয়েছে যাদের আমরা ঘৃণা এবং অবহেলায় দূরে সরিয়ে রাখি। তাদেরকে ছুলে আমরা স্নান করি। যদি তারা না থাকতো । যদি তারা নিজেদের উচ্চপদস্থ কর্মে নিযুক্ত করত তবে এই কাজগুলি কারা করতো। সত্যিই কি এরা অশুচি, নাকি এরা আমাদের কারণে অশুচি হয়েছে। আমরা যদি ভেবে দেখি যে কাজগুলি আমরা নিজেরা করতে পারিনা, সে কাজগুলি কিভাবে এই মানুষগুলি করে থাকে। কতটা সেবা পরায়ণ মানসিকতা থাকলে এমন কাজ করা যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে কারোরই তেমন অর্থের অভাব নেই যে অর্থের জন্য মানুষ এমনতর কাজ করবে। কিন্তু এই মানুষগুলি সত্যিই আমাদের জন্যই এই কাজগুলি করে থাকে। যত বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া হোক না কেন আমরা কি এমন তর কাজ করতে পারতাম। সত্যিই কি পারিশ্রমিকটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ?
প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি থেকে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করেন
সত্যিই কি এই মানুষগুলিকে অবহেলা করা যায়। নাকি এই মানুষগুলিকে সর্বোচ্চ স্থানে রাখা উচিত। ঠিক যেমন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়
কে বলে বন্ধু তোমারে অস্পৃশ্য অশুচি ,
শুচি তা ফিরিছে সদা তোমারই পিছনে।
তুমি আছো গৃহ বাসে তাই আছে রুচি,
নইলে মানুষ বুঝি ফিরে যেত বনে।
গতকাল এই সকল মানুষদেরই সম্বর্ধনায় একটি বিশেষ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছিল আমাদের কৃষ্ণনগরের চ্যালেঞ্জের মোড় নামক স্থানে। যে অনুষ্ঠানটি সত্যিই আমাকে আপ্লুত করেছিল। আমার মনে হয়েছিল এমন কাজ হয়তো সবার দ্বারা হতে পারে না। এই মানুষগুলিকে পায়ের তলায় স্থান না দিয়ে মাথার উপরে রাখা উচিত। না হলে সত্যিই আমরা এই সমাজে বসবাস করতে পারবো না।
আসলে আপনি আমাদের সাথে বেশ কিছু মানুষের সম্পর্কে আলোচনা করেছেন আপনি ঠিকই বলেছেন এই মানুষগুলোকে পায়ের তলায় স্থান না দিয়ে মাথায় করে রাখা উচিত কারণ তারা আমাদের সমাজের জন্য আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে কাজগুলো করে এগুলো আমাদের জন্য অনেক বেশি মূল্যবান ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit