আজ শ্রীমৎ স্বামী যোগানন্দ জি মহারাজের জন্মতিথি

in hive-120823 •  3 months ago  (edited)

আজ ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ চতুর্থী তিথি যে তিথি রামকৃষ্ণ মিশন ও ভাবধারার একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় তিথি। এই তিথিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভগবান শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের আর এক সন্ন্যাসী সন্তান শ্রীমৎ স্বামী যোগানন্দ জি মহারাজ।

IMG_20250318_220611.jpg

যোগানন্দ জি মহারাজ প্রথম যখন ঠাকুরকে দেখেছিলেন তখন শ্রী শ্রী ঠাকুর তাকে তার বাগানের গোলাপ গাছের প্রথম ফুলটি মহারাজ কে দিয়েছিলেন। এই ছিল তাদের প্রথম সাক্ষাৎ। শ্রী শ্রী ঠাকুরের ছয় জন ঈশ্বর কোটি সন্তানের মধ্যে শ্রী যোগিন মহারাজ ছিলেন একজন। তিনি ১৮৬১ সালে দক্ষিণেশ্বরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পূর্বাশ্রম নাম ছিল যোগীন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী।

মহারাজ ছিলেন অত্যন্ত শান্ত , নিরীহ ও ভাবুকপ্রকৃতির। ভগবান শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ যোগিন মহারাজ কে দীক্ষা দিলে কাছে তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করে যদি গৃহ ত্যাগ করেন সেই ভয়ে তার মা ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যেন তিনি তাকে দীক্ষা না দেন। এবং ঠাকুরও তার মাকে কথা দিয়েছিলেন যে তিনি যোগিন মহারাজকে দীক্ষা দেবেন না।

ঠাকুরের দেহান্তের পর যখন শ্রী শ্রী মা যখন শ্রীবৃন্দাবন নামে তীর্থ করতে গিয়েছিলেন তখন যোগিন মহারাজের সৌভাগ্য হয়েছিল মায়ের সাথে যাওয়ার। শ্রী বৃন্দাবন ধাম ঠাকুরের স্বপ্ন দেশে শ্রী শ্রী মা যোগিন মহারাজ কে দীক্ষা দিয়েছিলেন। এই হিসেবে শ্রী শ্রী মায়ের প্রথম দীক্ষা সন্তান হয়েছিলেন শ্রী যোগীন মহারাজ। মা, তাই একবার বলেছিলেন, "আমার ভার যোগীন নিতে পেরেছিল আর এখন শরৎ নিয়েছে।"

ভগবান শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ একবার যোগিন মহারাজ কে শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন,"ভক্ত হবি তো বোকা হবে কেন?"অর্থাৎ ভক্ত হলেও বোকা হওয়া যায় চলবে না। ভক্ত হবে চতুর। কারণ সে তার ভক্তি ভালোবাসা দিয়ে ভগবানের মন জয় করতে পেরেছে। তবে তার কাছে এই জাগতিক বিষয় কি?

স্বামী বিবেকানন্দ যোগিন মহারাজ সম্বন্ধে বলেছিলেন যে তিনি সর্বতোভাবে কামজিৎ । যোগিন মহারাজ অবসর সময়ে ধর্মগ্রন্থ পাঠ অপেক্ষা সাধনভজন করে বেশি সময় কাটাতেন। স্বামীজি বিদেশ থেকে ফিরে ১৮৯৭ সালে রামকৃষ্ণ মিশনের প্রথম শুভ সূচনা করেন তখন যোগিন মহারাজ ওয়াইস প্রেসিডেন্ট এর পদ গ্রহণ করেন।

আজ সেই শুভ তিথিতে মহারাজের জন্ম উৎসব সকল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে পালিত হচ্ছে। ভগবান শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের সকল সন্ন্যাসী সন্তান হলো রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের আদর্শ। ঠাকুর যাদেরকে গ্রহণ করেছিলেন এবং যারা নিজেদের সর্বস্ব ঠাকুরের শ্রীচরণে অর্পণ করার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। যাদের জীবন ছিল সাধনা। যারা ঠাকুরকে নিজেদের সর্বস্ব মনে করতেন সেই সকল উচ্চকোটি মহাপুরুষদের শ্রীচরণে সহস্র কোটি আভূমিষ্ঠ প্রণাম অর্পণ করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

তোমার পোস্ট পড়ে নতুন নতুন অনেক কিছুই জানতে পারি। আগে কখনোই স্বামী যোগানন্দ সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। তোমার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো।

Loading...
  • যোগানন্দ জি মহারাজ সম্পর্কে,‌ রামকৃষ্ণ দেবের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ ও পরবর্তী সম্পর্কের কথা, আজ আপনি আপনার পোস্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। সত্যি কথা বলতে রামকৃষ্ণ মিশনের সাথে যুক্ত থাকার কারণে এই বিষয়গুলি এতো গভীরভাবে আপনি জানতে পেরেছেন বলেই আমার বিশ্বাস। আর সৌভাগ্যবশত এই প্লাটফর্মে আপনি যুক্ত হয়েছেন বলে, আপনার লেখার মাধ্যমে বেশ কিছু জিনিস আমরাও জানতে পারছি।

  • আসলে যার মত যেই দিকে। শ্রী‌শ্রী ঠাকুরের কাছ থেকে দীক্ষা না পেলেও, যোগানন্দ জি মহারাজ কিন্তু নিজের পথ থেকে সরে আসেননি। তিনি কিন্তু ঠাকুরের পথে অবলম্বন করেছেন এবং পরবর্তীতে তিনি মায়ের কাছ থেকে দীক্ষা প্রাপ্ত হন। সত্যিই সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। অনেক অজানা জিনিস সম্পর্কে জানলাম। এই ধরনের লেখা আশা করছি আগামীতেও আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

ঠাকুরও তার মাকে কথা দিয়েছিলেন যে তিনি যোগিন মহারাজকে ভিক্ষা দেবেন না।

  • উপরোক্ত লাইনে ভিক্ষার জায়গায় দীক্ষা হবে। এরকম আরো কিছু ছোটো ছোটো ভুল আপনার লেখায় দেখলাম। পোস্ট করার খুবই অবশ্যই সম্পূর্ণ লেখাটি একবার পড়ে নেবেন, যাতে এই ধরনের‌ ভুলগুলো চোখে পড়ে।

TEAM 7 ¡Congratulations! This post has been voted through steemcurator07. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.

1000098952.png

Curated By: @muzack1