কিছু মনের কথা

in hive-120823 •  3 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা। আমরা প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত জীবনে ভীষণই ব্যস্ত এবং সেই ব্যস্ততার মধ্যে আমরা এতটাই ডুবে রয়েছি যে সেই ব্যস্ততা থেকে একটু সময় বের করে নেওয়ার ফুরসৎ আমাদের নেই। প্রত্যেক দিনের রুটিন অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে যখন সেই রুটিনের মধ্যে অতিরিক্ত কোন কাজ যুক্ত হয় তখন পুরো রুটিনটাই একেবারে পাল্টে যায়।

IMG-20250401-WA0017.jpg

আবার নতুন করে সেই রুটিনে ফিরে আসতে বেশ কয়েক ঘন্টা সময় লেগে যায় তা নিয়ে একটু ভাবতে। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজের কথা যদি বলি তবে এ সমস্যাটা আমার ভীষণ আছে। একটা বাধা ধরা নিয়ম অনুসারে চলতে চলতে যখন সেই নিয়মে একটু ছেদঘটে তখন তা পূরণ করতে আমার বেশ কিছু সময় লেগে যায়। ভাবতে পারিনা আবার কিভাবে শুরু করব।

বিগত কিছুদিন আপনাদের সঙ্গে কিছুই ভাগ করে নিতে পারিনি কারণ মিশনের দীক্ষা অনুষ্ঠান ছিল। বেলুড় মঠের ভাইস প্রেসিডেন্ট মহারাজ দিব্যানন্দ জি এসেছিলেন কৃষ্ণনগর রামকৃষ্ণ মিশনে। আগের একটি পোস্টে আমি তার সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করেছিলাম।

IMG-20250401-WA0018.jpg

আজ মহারাজের সম্বন্ধে আরো কিছু কথা আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব। মহারাজা একবার নিজের মুখেই বলেছিলেন তিনি একবার ট্রেনে যাত্রা করছিলেন। ট্রেনে একটি অল্প বয়সী যুবক প্রচন্ড নেশাগ্রস্থ অবস্থায় উঠেছিল ।হঠাৎ সে ট্রেনিং সেন্সলেস হয়ে যায় ।ফলে মহারাজ নিজের গন্তব্যস্থল বাদ দিয়ে পরবর্তী স্টেশনে নেমে, সেই ছেলেটিকে কোলে তুলে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে যতক্ষণ পর্যন্ত ছেলেটির সেন্স না ফেরে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে অপেক্ষা করে ছিলেন ও ছেলেটি একটু সুস্থ হলে তিনি তার সঙ্গে কথা বলেন ও তার সঙ্গে পরবর্তী সময়ে দেখা করার কথা ও বলেন।

IMG-20250401-WA0013.jpg

মহারাজের স্বভাব যেন পিতার মতন। তিনি এখন কাশিপুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ। একবার আমি কাশিপুর রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়েছিলাম ফেরার পথে খুব মন খারাপ থাকায় আমি এদিক-ওদিক কি যেন খুঁজছিলাম হঠাৎ দেখি একটি ঘরের ভিতর থেকে মহারাজ হাত ইশারা করে ডাকছেন। আমি ছুটে দরজা খুলে তার কাছে গিয়ে তাকে প্রণাম করতেই তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন কখন এসেছিস। আমি ভেবেছিলাম তার আমার কথা মনেই নেই। কিন্তু তিনি যেই আমার হাতে এক মুঠো লজেন্স দিয়ে বললেন তাড়াতাড়ি ছোট ট্রেনটা ধরতে হবে নইলে কৃষ্ণনগর পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাবে এ কথা শুনে আমি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলাম তিনি কোন কথাই ভোলেন নি। এভাবেই প্রত্যেক মাসে যখন তিনি কৃষ্ণনগরে আসতেন তখন আমাকে লজেন্স হাতে দিয়ে বলতেন তাড়াতাড়ি ছোট না হলে ট্রেনটা ধরতে পারবি না ইউনিভার্সিটি যেতে তোর দেরি হয়ে যাবে।

সত্যি কথা বলতে আমাদের বাবা-মা আমাদের ভীষণ ভালবাসেন কিন্তু সেই তালিকায় যখন আরো কোন মানুষ যুক্ত হয় তখন যেন জীবনটা অন্য একটি মাত্রা পায়। আমার ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে । আমি যখন মিশনের কোন কাজে ব্যস্ত থাকি তখন যেন সারা পৃথিবীর সব কাজ আমি ভুলে যাই। মনে হয় এই মুহূর্ত টাই আমার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এ যেন ভগবানের এক আশীর্বাদ রূপে আমার কাছে এসেছে তাই সব সময় সেই সময়টিকে আমি খুব আন্তরিকতা ও ভালোবাসার সাথে সেই সময়টা কাটানোর চেষ্টা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...