![]() |
---|
Hello,
Everyone,
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে খুব কাছের মানুষের প্রতি আমাদের হাজার অভিযোগ থাকলেও, কিছু কিছু বিষয়ে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর শিক্ষা বোধহয় প্রত্যেকেরই থাকা উচিত।
আমার এতটুকু জীবনে খুব কাছের মানুষদের থেকে আমি অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি। তবে সব সময় চেষ্টা করেছি তাদের খারাপ সময়ে পাশে থাকার। কারণ ভালো সময় প্রত্যেকেই সঙ্গ দিতে পারে, তবে খারাপ সময় এলেই বোঝা যায় আদেও তারা কতটা কাছের।
![]() |
---|
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে জটিলতা ছিলো, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কারণ জটিলতা বিহীন জীবন বোধহয় এই পৃথিবীতে কোনো মানুষেরই নয়। তবে কোনো জটিলতাই বোধহয় আমাদের বিবেকের উর্ধ্বে হতে পারে না। প্রত্যেক দিনের জীবন যাপনে আমাদের সকলেরই এমন কিছু পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, যেখানে আমরা নিজের মনকে প্রশ্ন করি এবং মন দুটো রাস্তা দেখায় আমাদের।
একটা সততার এবং অন্যটা অসৎ। দুটি দিকের ভালো মন্দ সম্পর্কে আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি। তাই জেনে বুঝে সৎ পথ অবলম্বন করা ঠিক হবে, নাকি অসৎ পথ এই লড়াই কমবেশি সকলেই লড়েছি। কারণ আমরা সকলেই জানি সৎ পথে চলা বেশ কঠিন, আর অসৎ পথে চলা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি সহজ।পরিনামের কথা তখন খুব একটা মাথায় আসে না। তখন বর্তমান পরিস্থিতি পার করাটাই মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর এখানেই আমরা ভুল করি।
তবে কোনো একটা বিষয়ে যদি আমাদের বিন্দুমাত্র জ্ঞান না থাকে, সেই বিষয়টি সম্পর্কে যদি আমাদের মনে দ্বন্দ দেখা যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে কিন্তু ভুল পথ বেছে নিলেও তা খানিক ক্ষমার যোগ্য হয়। বিবেকের কাছ থেকে আমরা এই উত্তরটুকু পাই যে- আমি অজান্তেই ভুল করেছি।
![]() |
---|
কিন্তু যখন আমরা জেনে বুঝে কোনো ভুল দীর্ঘ দিন করি, সেটাই একটা সময় অন্যায়ের তালিকায় গন্য হয়, এটা আমরা সকলেই জানি। তাই জানা বোঝার পরেও যখন আমরা সেই পথ অবলম্বন করি, তখন কিন্তু সেটাকে আর আমরা অজান্তে করা ভুল বলতে পারি না। বরং সেটা জেনেশুনে করা অন্যায়ের তালিকায় সামিল হয়।
আমি উপরোক্ত কথাগুলো লিখছি তার মানে এই নয় যে, আমি সর্বদাই সঠিক। তবে হ্যাঁ এটুকু আমি বলতে পারি, আমি নিজের ভুল বুঝতে পারলে সেটাকে স্বীকার করার ক্ষমতা রাখি এবং সেই ভুল জীবনে আর দ্বিতীয় বার করি না। কারণ অজান্তে করা ভুলগুলো কখনো অন্যায় হতে পারে না, আর নিজের ভুল স্বীকার করলে কখনো ছোট হতে হয় না, এই শিক্ষাটা একেবারেই ছোট থেকে মায়ের কাছে পেয়েছি।
তবে নিজের ভুলে অন্য কেউ কষ্ট পেয়েছে এটা জানার পর আমি নিজেও কষ্ট পাই এবং কষ্ট দেওয়ার জন্য অকপটে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিই। কম বয়সে আমরা আমাদের জীবনে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করি। মানুষ চিনতে ভুল করি, ভুল মানুষকে বিশ্বাস করি, আর সঠিক মানুষগুলোকে অবজ্ঞা করি।
সময়ের স্রোতে ভাসতে ভাসতে যখন জীবনে বাস্তবের সম্মুখীন হই, তখন নিজের সিদ্ধান্তের জন্য যত বেশি আফসোস হয়, তার থেকেও বেশি খারাপ লাগা কাজ করে, যখন কম বয়সে অবজ্ঞা করা মানুষ গুলোর সাথে পুনরায় আবার মুখোমুখি হতে হয়।
![]() |
---|
এইরকম একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে আজ। খানিকটা লজ্জা, খানিকটা অপরাধবোধ, খানিকটা মানুষ চিনতে না পারার আফসোস, সবকিছুর মিশ্র অনুভূতি নিয়ে অনেকক্ষণ কথা হয়েছে পুরনো দিনের এক বন্ধুর সাথে। অনেক বছর বাদে কথা হলো বলে প্রথমে একটু জড়তা কাজ করছিলো। কিন্তু পরে মনে হলো না বন্ধুত্বটা সেই একই জায়গাতে রয়েছে।
একেবারে লেখার শুরুতে বললাম না কৃতজ্ঞতাবোধ আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে থাকা উচিত। আমার জীবনেরও একটা কঠিন সময়ে এই বন্ধুটি যেভাবে পাশে ছিলো, তাতে ওর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতাবোধ অসীম। কিন্তু ওর প্রতি আমার এই কৃতজ্ঞতাবোধ আজও ওর সামনে প্রকাশ করতে পারিনি। তবে মনে মনে বহুবার সে কথা স্বীকার করেছি।
তখন পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে, না ওকে সবটা বুঝিয়ে বলতে পেরেছি। আর না নিজে জীবনের ভুল সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবগত হতে পেরেছি। আজ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের ভুলটা যেমন বুঝতে পারি, ঠিক বুঝতে পারি কতখানি কষ্ট দিয়েছিলাম ওকে। তখন ক্ষমা চেয়েছি ঠিকই, কিন্তু ওর কষ্টের আন্দাজ তখন ততটাও করতে পারিনি।
তাই আজ কথা বলার মাধ্যমে আমি ক্ষমা চেয়েছি। হয়তো ও বুঝেছে বা হয়তো বোঝেনি। তবে জীবনের গতিপথে অনেকটাই এগিয়ে এসেছি আমরা দুজন। পরিবর্তন এসেছে দুজনের জীবনেই। তবে কিছু অনুভূতি আসলেই অপরিবর্তনীয় থাকে, তা আজ আরও একবার বুঝলাম।
মানুষ বিশেষে এই অনুভূতি হয় ভিন্ন। আমার কাছে সেটা কৃতজ্ঞতাবোধ, আবার কারো কাছে অব্যক্ত ভালোবাসা। তবে এই কথা ঠিক ভালোবাসা প্রকাশিত হলে মূল্য হারায়। অপ্রকাশিত ভালোবাসার অনেক জোর, নিজের জীবন দিয়ে আমি তা বুঝেছি।