খামন ধোকলা- একটি প্রসিদ্ধ গুজরাটি খাবার!Khaman Dhokla-Gujarati delicacy!

in hive-120823 •  7 days ago 
IMG_20250623_222626.jpg

যেরকমটা শীর্ষক এ লিখেছি, খামন ধোকলা ভারতের একটি রাজ্য গুজরাটের প্রসিদ্ধ খাবার।
ভারতবাসী অনেকেই হয়তো খেয়ে থাকবেন এই খাবারটি, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেকেই এই খাবার অপছন্দ করেন, তার কারণ পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে গিয়ে সঠিক সামগ্রী ব্যবহার না করায়, কিছু ক্ষেত্রে এটি হয় অতিরিক্ত শুকনো করে ফেলে, ফলে খাবার সময় গলায় আটকে যাবার উপক্রম হয়, আবার কোথাও এত মিষ্টি ব্যবহৃত হয় যে, একটি সুস্বাস্থ্য খাবার হয়ে যায় অস্বাস্থ্যকর!

আমি কিভাবে তৈরি করেছি আগে আপনাদের সাথে সেটা ভাগ করে নি। তারপর জানাবো এইভাবে তৈরি করলে উপরিউক্ত সমস্যা কখনোই এই খাবার খাওয়ার সময় বোধ করবেন না কেনো!

উপকরণ:-

1000060574.jpg

ছোলার বেসন (gram flour)200g
টক দই (curd)2tbsp.
পাতিলেবু(lime)1no.
খাবার সোডা(1/4tsp)/ইনো (eno)1pack
কাঁচা লঙ্কা (green chilis)8-10slited
হিং (Asafoetida)1/2 tsp.
কারি পাতা(curry leaves)10-12nos.
হলুদ(turmeric powder)1/2 tsp
চিনি(sugar)2tbsp
ধনে পাতা(cilantro leaves)1/2 bunch(finely chopped)
নারকেল (Coconut)🥥 কোরানো (for decoration)
নুন (Salt)প্রয়োজন অনুযায়ী!🧂 (to taste!)
সাদা তেল(refined oil)1tbsp
কালো সর্ষে (Mustard seeds)1tsp.

IMG_20250623_223456.jpg

পদ্ধতি:--

1000060942.jpg

1000060943.jpg
1000060944.jpg
  • প্রথম ধাপ:- একটি পাত্রে আমি বেসন আর হলুদের গুড়ো একসাথে ছাঁকনির সাহায্য ছেঁকে নিয়েছি।
    এবার যে কাপে করে বেসন মেপে নিয়েছি ঠিক সেই কাপেই দই নিয়েছি, এখানে জানিয়ে রাখি চেষ্টা করবেন দই যেনো ফ্রেশ হয়।
    আরেকটি পাত্রে, দই, পরিমাপ মত জল, নুন, চিনি, হিং দিয়ে একটি সঠিক ভারসাম্যের ঘোল তৈরি করে নিয়েছি আলাদা পাত্রে।

1000060945.jpg

1000060946.jpg
1000060947.jpg
  • দ্বিতীয় ধাপ:- এবার পাতলা দইয়ের ঘোল দিয়ে বেসনের একটা ব্যাটার তৈরি করতে হবে।
    এখানে উল্লেখ্য কাজটি একটু দক্ষতার সাথে করতে হবে, মানে বেসন হয় ক্লক অথবা এন্টি ক্লক এর দিক অনুসারে একটি হুইস্কার এর সাহায্যে মেলাতে হবে।

কাজটি সম্পন্ন করতে 5-7 মিনিট লাগবে, এরপর একটি ঢাকনার সাহায্যে এই বেসনের মিশ্রণকে 30 মিনিট রেস্ট এ রেখে দিতে হবে।

1000060948.jpg
1000060950.jpg
  • তৃতীয় ধাপ:- 30 মিনিট বাদে ঢাকনা খোলার আগে, গ্যাসে একটি বড় পাত্রে জল বসিয়ে তারমধ্যে একটি স্ট্যান্ড রেখে জলকে গরম করতে বসাতে হবে।
    এদিকে বেসন মিশ্রণের চাপা তুলে, সেই মিশ্রণে খাবার সোডা অথবা আমি যেমন ফ্রুট সল্ট ব্যবহার করেছি সেটা দিতে হবে।

1000060951.jpg

যেহেতু আমি ফ্রুট সল্ট ব্যবহার করেছি তাই এক চায়ের চামচ জল দিয়েছি সল্ট এক্টিভেট করবার জন্য।

1000060952.jpg

  • চতুর্থ ধাপ:- কোনো সময় ব্যয় না করে পুনরায় ভালো করে মিশ্রণটি মেশাতে হবে 5-7 মিনিট।
    এবার একটি থালায় সাদা তেল ভালো ভাবে মাখিয়ে নিতে হবে।
    1000060949.jpg

    এরপর, তৈরি মিশ্রণ থালায় দিয়ে ফুটন্ত জলে রাখা স্ট্যান্ডের উপরে বসিয়ে পাত্রটি ঢেকে দিতে হবে।
1000060953.jpg
1000060954.jpg
  • পঞ্চম ধাপ:- মিনিট কুড়ি হাই ফ্লেম এ এরপর, আর মিনিট পাঁচেক মিডিয়াম আঁচে ধোকলার মিশ্রণকে রাখতে হবে। এরপর নিজেরাই দেখতে পারবেন ঢাকনা খুলে অথবা কাচের ঢাকনার উপর থেকে মিশ্রণটি কেকের মত ফুলে উঠেছে।

1000060965.jpg

  • ষষ্ঠ ধাপ:- আঁচ নিভিয়ে দিয়ে থালাটি নামিয়ে নিয়ে খানিক ঠান্ডা হতে দিতে হবে, তবে পুরোপুরি নয়।
    এই ফাঁকে আরেকটি পাত্র আঁচে বসিয়ে তাতে সাদা তেল দিন। তেল গরম হলে, একে একে সর্ষে, করি পাতা, চেরা কাঁচা লঙ্কা ফোড়ন দিতে হবে।
    কয়েক সেকেন্ড নেড়েচেড়ে, জল দিয়ে দিতে হবে ফোড়ন এর মধ্যে।

1000060968.jpg

এরপর, নুন, চিনি দিয়ে একটি পাতলা মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এটি চিনির পাতলা সিরা হিসেবে তৈরি করতে হবে, জলের আকারেই থাকবে।

চিনি জলের সাথে মিশে গেলে গ্যাস বন্ধের আগে লেবুর রস দিয়ে আরেকবার মিশিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিতে হবে।

1000060969.jpg

  • সপ্তম ধাপ:- উপরিউক্ত কাজটি করতে করতে দেখবেন নামিয়ে রাখা ধোকলা খানিক ঠান্ডা হয়ে গেছে, এবার রুম টেম্পারেচার এ থাকা খানিক জল ওই ধোকলার উপরে ছিটিয়ে দিতে হবে।

1000060970.jpg

এরপর, যে মিশ্রণটি তৈরি করা হয়েছিল সর্ষে, কারিপাতা দিয়ে, সেটিকে ধোকলার উপর ঢেলে দিতে হবে।

IMG_20250623_222655.jpg

  • অষ্টম ধাপ:-একটি ধারালো ছুরি দিয়ে নিজের পছন্দের আকারে কেটে নিয়ে, একটি প্লেটে কুচিয়ে রাখা ধনেপাতা এবং করানো ফ্রেশ নারকেল কোরা দিতে পরিবেশন করুন, গুজরাটের প্রসিদ্ধ খাবার খমন ধোকলা।

যেহেতু, জলের পরিবর্তে দইয়ের ঘোল দিয়ে বেসনের মিশ্রণ তৈরি করা হয়েছে, তাই দই এ উপস্থিত ক্রিম ধোকলাকে ড্রাই হতে দেয় না।
অনেকেই জলে সমস্ত উপাদান গুলে বেসনের ব্যাটার তৈরি করেন বলে খাবার সময় গলায় শুকনো বোধ হয়।

এই ধরনের স্বাস্থ্যকর অথচ নিরামিষ খাবার আপনারা মাঝেমধ্যে তৈরি করে দেখতে পারেন বাড়িতেই।
অনেকেই হয়তো বলবেন, চিনির ব্যবহার করা হলে সেটা কিভাবে স্বাস্থ্যকর থাকে?
সেক্ষেত্রে আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখি, প্রতিদিন 25 গ্রাম চিনি আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখা স্বাভাবিক।
এর বেশি হলে সেটা ক্ষতিকর।

আশাকরি আপনাদের আজকের এই রেসিপি পছন্দ হবে, যারা জানেন তাদের থেকেও যাদের এই খাবারটি সম্পর্কে ধারণা ছিলনা, তাদের জন্য হয়তো কাজের হবে!

1000010907.gif

1000010906.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমরা অনেকের অনেক রকম রেসিপি দেখে থাকি কিন্তু আপনার এই ধোকলার রেসিপিটি আসলেই অনেক সুন্দর হয়েছে এবং প্রতিটি উপকরণগুলো আমাদের মাঝে এক এক করে দেখিয়ে দিয়ে তৈরি করেছেন অবশ্যই বাসায় এটা আমি ট্রাই করে দেখব এবং ধোনের পাতা ও নারিকেল কুরা দেওয়াতে এটা আরও বেশি লোভনীয় দেখাচ্ছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করবার জন্য

এটা দেখতে দারুন আমি আগে কখনও ধোকলা রান্না করিনি, কিন্তু তোমার ধাপে ধাপে নির্দেশাবলী দেখে মনে হচ্ছে আমি সহজেই এটি চেষ্টা করে দেখতে পারি। পানির পরিবর্তে দই ব্যবহার করার টিপসটি নিখুঁত।

TEAM 6

Your content has been successfully curated by our team via @ genomil.

Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.

curation Banner.png

@genomil thank you my dear friend!

Loading...