নক্ষত্রের রাত!!

বিয়ের পরে আমার চাচাতো ভাই রোহানের দেখা পাওয়া টা বেশ মুশকিল হয়ে গিয়েছে। রোহান ভাইয়া আমার থেকে বড় হলেও আমাদের বোঝাপড়া টা বন্ধুর মতো। ভাইয়া গত ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করেছে। তবে সেটা আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও হয়নি। এইজন্যই ভাইয়ার বউ আপাতত ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতেই রয়েছে।ঈদের ছুটিতে অথবা সাধারণ ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেলেই রোহান ভাইয়াকে বাড়িতে পাওয়া যায় না। অধিকাংশ সময় থাকে শ্বশুরবাড়িতে। অথচ এই ছেলে আমাকে একটা সময় বলতো ও নাকী কখনোই একদিনের বেশি শ্বশুরবাড়িতে থাকবে না। সেসব অনেক আগের কথা। এবার ঈদে বাড়ি গিয়েও এই কাহিনী রোহান ভাইয়ার দেখা নাই। ভাইয়া তার ছুটির ৯ দিনের ৭ দিন কাটিয়েছে শ্বশুরবাড়িতেই। অবস্থা টা বোঝেন। এমন বউ পাগলা আমি দেখিনি।

১২ ই জুন বুধবার। আমি বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরেছি প্রায় রাত ১০ টার সময়। বাড়িতে ফিরে রাতের খাওয়া শেষ করে শুয়ে আছি। তখন রোহান ভাইয়া আমাকে ডাকে। ভাইয়ার ডাক শুনে আমি অবাক। জিজ্ঞেস করে বসলাম কী রে শ্বশুরবাড়ি থেকে কখন আসলি। ভাইয়ার জবাব আসলো এইতো কিছুক্ষণ আগে। এরপর বলল চল ছাদে যায় আড্ডা দেয়। রাত তখন ১১ টা। দুজন ছাদে চলে গেলাম। আকাশে দারুণ এক চাঁদ। ছাদ থেকে সামনে তাকালে বিশাল এক মাঠ দেখা যাচ্ছে। চাঁদের আলোয় মাঠটা বেশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। আকাশে অসংখ্য নক্ষত্র জ্বলজ্বল করছে। এবং দারুণ বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। যেই বাতাসে শরীরের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাচ্ছে।

আমি এবং রোহান ভাইয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা শুরু করলাম। নানা বিষয় নিয়ে আড্ডা চললো অনেকক্ষণ। এরপর হঠাৎ আমার কেন জানি মনে হলো একটা কবিতা আবৃত্তি করা যাক। যেমন কথা তেমন কাজ। এর আগে আবৃত্তি করলেও সরাসরি ক‍্যামেরার সামনে এসে কখনও আবৃত্তি করিনি। এইজন্য রোহান ভাইয়াকে বললাম আমার পেছনে চাঁদটাকে ফোকাস করে ভিডিও করতে এবং আমি একটা কবিতা আবৃত্তি করব। কিন্তু কোন কবিতা টা আবৃত্তি করা যায় ভেবে পাচ্ছিলাম না। এমন সুন্দর রাতে তো জীবনানন্দ দাশের কবিতা বেশি ভালো লাগে। কিন্তু কোন কবিতা টা। সিধান্ত নিলাম বনলতা সেন কবিতা টা আবৃত্তি করব। কারণ এই কবিতা টার ভেতরে বিশেষ একটা ব‍্যাপার আছে।

মোটামুটি চেষ্টা করেছিলাম। আবৃত্তি করার পরে ভিডিও টা দেখে বেশ ভালোই লাগছিল। এরপর আমার এবং ভাইয়ার আড্ডা চললো আরও কয়েক ঘন্টা। সেই রাতের স্মৃতিতে আজ এই কবিতা আবৃত্তির ভিডিও টা আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেব। আশাকরি আপনাদের বেশ ভালো লাগবে।

কবিতা আবৃত্তি