06-06-2025
২৩ জ্যৈষ্ঠ , ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো দেখতে দেখতে আরেকটা ঈদ চলে আসলো। কিছুদিন আগেই রোজা ঈদ উদযাপন করলাম। আসলে সময় যে কিভাবে চলে গেল টেরই পাচ্ছি না! এক সপ্তাহ কেমনে চলে যাচ্ছে সেটাও বুঝা যাচ্ছে না। সময়ে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয়। আমাদের আবেগ-অনুভূতি, ভালোলাগা,খারাপলাগা! কাল ঈদুল আযহা! এবারের ঈদটা পরিবারের সাথে ঈদযাপন করার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না! পরিবার ছাড়া ঈদ কি আর জমে! সবাই ঈদ উদযাপন করার মজাটাই অন্যরকম আসলে। কিন্তু যতই বড় হচ্ছি ততই যেন নীরবতাকে ভালোবাসতে শিখে যাচ্ছে। চুপচাপ থেকে ঈদ উদযাপন করে যাচ্ছি। আগের মতে হৈহুল্লোড় নেই! হয়তো বড় হয়ে গেছি অনেক! ছোটদের দেখলে মনে হয় কেন বড় হলাম! ছেট বেলায় ভাবতাম কবে বড় হবো, কবে গাড়িতে চড়বো? আর এখন ভাবী কেন বড় হলাম?
ছোটবেলা নিজের মধ্যে কোনো টেনশন ছিল না! ছোট ছোট বিষয়গুলাতেই সুখ খুঁজে পেতাম। ছোটবেলার শৈশবের কুরবানি ঈদের কথায় বলি! তখন আমাদের বাপ-চাচারা গরু কিনে নিয়ে আসলে পাড়ায় যেন হৈ-হুল্লোড় শুরু হয়ে যেত! আমরা যারা ছোট ছিলাম আমরা সবাই মিলে গরু দেখতে যেতাম। কার গরুটা সবচেয়ে বড়, কার গরুর রঙটা সুন্দর আবার কার গরুর শিংটা বড়! এসব নিয়েই আমাদের আলোচনা হতো! তবে আমরা সবসময় আমাদের বাপ-চাচাদের গরু নিয়েই গর্ব করতাম বেশি, হাহা! পাড়ার বাকি গরু যতই বড় হোক আমাদের গরু সবসময় বড় রাখতাম। আমরা আলোচনা করতাম পাড়ার ওমুক গরুর সাথে আমাদের গরুর লড়াই লাগালে আমাদের টা জিতে যাবে! আমাদের গরু যখন নিয়ে আসা হতো তখন আমরা সবাই গরুকে অনেক আদর করতাম। গরুর জন্য খড় দেয়া, ঘাস দেয়া, ভূষির পানি দেয়া থেকে শুরু করে সবই করতাম আমরা!
আমাদের বাড়ির বড়রা না করতো গরুর সামনে না যেতে। কারণ গরু যদি গুতা দেয় আমাদের! কে শুনে কার কথা। আমরা তখন আরও বেশি যেতাম গরুর কাছে। গরুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতাম। গরু তখন আমাদের গুতা দিতো না! কয়েকদিনেই কুরবানি ঈদের জন্য গরুটা আমাদের কাছে অনেক আপন হয়ে যেত! ঈদের আগেরদিন রাতে গরুকে বেশি করে খাওয়ানো হতো। সারারাত আমরা সজাগ থাকতাম! গ্রামে তখন গরু চুরিও হতো। এজন্য রাতভর জেগে থাকতে হতো! ঈদের দিন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গরুকে গোসল করিয়ে নিতাম! গোসল করিয়ে গরুকে ভূষির পানি খাওয়ানো হতো পেট ভরে । তারপর হালকা মিষ্টি সেমাই খেয়ে চলে যেতাম ঈদের মাঠে। কুরবানি ঈদে একটা জিনিস খেয়াল করতাম! বাপ-চাচাদের মেজাজ খুব গরম থাকতো!
সকাল থেকে অনেক কাজ করে ফেলতো তারা! তারপর ঈদের নামাজের পর গরু কুরবানি দেয়ার প্রস্তুতি চলতো! তখন পাড়ার বাকিদের কুরবানি আমরা ছোটরা হেটেঁ হেটেঁ দেখতাম! অনেক গরু কুরবানি দিতে কষ্ট হতো! ১০-১২ জন মিলেও কুরবানি দিতে পারতো না। পাড়ায় তখন অন্যরকম একটা অবস্থা বিরাজ করতো! আমাদের কুরবানি দেয়ার পর আমরা কাছ থেকেই দেখতাম। তারপর গরুর মাংসের রেজালা,বিরিয়ানী খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হতো বিকাল অবধি! সবকিছু প্রসেসিং করতে অনেক টাইম লেগে যেত বলতে গেলে। আমরা অপেক্ষায় থাকতাম কখন মায়ের হাতের গরুর মাংসের রেজালা খাবো। বিকালে আবার আমরা খেলাধুলা করতাম সবাই মিলে। বাড়িতে মেহমানে ভরপুর থাকতো। সবমিলিয়ে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করতো তখন।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কুরবানি ঈদের শৈশব স্মৃতি শেয়ার করেছেন।আপনি খুব ভালোভাবে সময়ের পরিবর্তনের দিকটি তুলে ধরেছেন, কিভাবে বড় হওয়ার সাথে সাথে ঈদের আনন্দের ধরন বদলে গেছে।আপনার লেখায় আবেগের প্রকাশ খুব সুন্দর হয়েছে। সর্বোপরি ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Twitter share
Today's comment link:
https://x.com/Emtiaz38/status/1931028234331988184?t=KgZy0NTgluEW3A6g2zRo6w&s=19
https://x.com/Emtiaz38/status/1931029008453681363?t=VXaRBPjUXVlxMCNwP-IW-w&s=19
https://x.com/Emtiaz38/status/1931030292451721418?t=u4WgUcGyVTvQEOsfovw-ZQ&s=19
https://x.com/Emtiaz38/status/1931031030607278356?t=rnT6WpHEkdd4B7sKDJKEow&s=19
https://x.com/Emtiaz38/status/1931031902531748090?t=t8Hck5csqX5GACytFIlxRg&s=19
https://x.com/Emtiaz38/status/1931032964374385080?t=fk4-sZ1L5b-uH3V2f7Meow&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit