রোগ ব্যারামে ভরে গেছে মানব শরীর।

in hive-129948 •  last month 


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17498860128311921696110023146494.jpg


সোর্স



বর্তমান সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের শরীর নিয়ে প্রত্যেকেই চিন্তিত। কারণ দেখা যাচ্ছে যতদিন যাচ্ছে মানব শরীর একটা রোগের কারখানা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আগে দেখেছিলাম মানুষ কত দীর্ঘ বছর অতিক্রম করতো একদম রোগ ব্যারাম ছাড়া। আগেকার মানুষদের তো প্রায় ১০০ বছর উত্তীর্ণ করতেও দেখা যেত। ১১০, ১২০, ১৩০ বছর অতিক্রম করেও অনেক সময় দেখা গেছে আরও বেশি আয়ু নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেঁচে রয়েছে অনেক মানুষ। একদম বার্ধক্য জনিত কারণে মারা যেত। আগেকার সময়ের খাদ্য খাবার ছিল অনেক সুস্বাস্থ্যকর এবং ভেজাল মুক্ত। আবহাওয়া ছিল একদম উপযুক্ত। শীতের সময় শীত, গরমের সময় গরম, বর্ষাকালে বৃষ্টি হতো কোন কিছুর অভাব হতো না। সার ছাড়া শাকসবজি চাষ করে তারা সব সময় খেত। পুকুরের তাজা মাছ তারা খেতে পারত যা একদম ভালোভাবে তারা চাষ করত বা প্রাকৃতিক উপায়ে সেই মাছগুলো জন্ম নিত এবং বড় হতো। আগেকার সময় মানুষ যা খেয়েছে সবই ছিল প্রকৃতির দান। কোনরকম কৃত্রিম খাবার বা ক্ষতিকারক খাবার তারা কখনোই খেত না। সূর্য ওঠার সাথেই ভোরবেলায় মোরগের ডাকে তাদের ঘুম ভাঙতো এবং সূর্যাস্তের সাথে সাথে তারা রাতের খাওয়া দাওয়া সম্পন্ন করে ঘুমিয়ে পড়তো। না ছিল কোন মোবাইল ফোন না ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার না ছিল অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় নষ্ট করার কোন ইচ্ছা।


সময় মত খাওয়া দাওয়া আর সময়মতো ঘুম একদম পরিপাটি সুন্দর একটি জীবন যাপন তারা পালন করত। এছাড়াও আগেকার সময়ে যেহেতু কৃষি কাজ জীবিকা ছিল। তাই সারাদিনে মোটামুটি কৃষিকাজের ক্ষেত্রেই কঠোর শারীরিক পরিশ্রম হয়ে যেত। যার ফলে আলাদা করে ব্যায়াম করার দরকার হতো না, শরীর এমনি স্বতঃস্ফূর্ত এবং ভালো থাকতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে মানুষের ঘুমের পরিমাণ কমে গেছে খাওয়া-দাওয়া খুবই খারাপ হয়ে গেছে। প্রকৃতিতে বর্তমানে যে সব শাকসবজি চাষ করা হয় সেগুলো হয়েছে অনেক বেশি ক্ষতিকর। নদী, পুকুর বা সমুদ্রের মাছ আমাদের পর্যন্ত পৌঁছাতে পৌঁছাতে অনেক বেশি খারাপ এবং গ্রহণের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যায়। শাকসবজিতে বিষাক্ত রাসায়নিক সার থাকে। এমনকি বায়ু হয়ে গেছে দূষিত। যার ফলে নিঃশ্বাসের মধ্য দিয়ে ঢুকে যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে রোগ ব্যারাম। আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটেছে ,সঠিক সময় শীত বা বর্ষা হতে দেখা যায় না। যার ফলে পরিবেশ হয়েছে অনেক বেশি উত্তপ্ত। আর এজন্যই মানব শরীরের জন্য এবং জীবন জীবিকার জন্য অনেকটাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আর এই সব মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের মানব শরীর। এতটাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে আমাদের গড় আয়ু কমতে কমতে অনেক বেশি কমে গেছে।


আগেকার সময় যেখানে ১০০ বছরের মানুষ দেখতে পাওয়া যেত বর্তমানে সেখানে খুব বেশি হলে 60 বছর সুস্থ ভাবে বাঁচতে দেখা যায়। তাও হয়তো বেশি বলে ফেললাম। কারণ সুস্থ ভাবে বাঁচতে ঠিক দেখা যায় না একাধিক রোগ ব্যারাম নিয়েই তারা বেঁচে থাকে। এখন দেখাও যায় খুবই কম বয়সে মানুষের রোগ ব্যারাম ধরে নিচ্ছে। পৃথিবীতে তৈরি হয়েছে নতুন নতুন রোগ ব্যারাম এবং শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা যা আগে কখনো দেখা যায়নি বা আগেকার মানুষ হয়তো জানতোও না। নতুন নতুন রোগ সৃষ্টির পাশাপাশি এই রোগ গুলি যেমন মানুষের আয়ু কমিয়ে দিয়েছে তেমন ধীরে ধীরে কম বয়সী মানুষদের ওপরেও আক্রমণ শুরু করছে। যে কোন হসপিটালে গেলেই দেখা যায় বয়স্করা যেমন রোগে আক্রান্ত তার থেকে একটু হলেও বেশি বাচ্চারা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার আওতায় রয়েছে। এমনকি সদ্যোজাত শিশুরাও যেন কোন দিক থেকে বাদ যায় না। তাদেরও হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। হার্টের সমস্যা, খাদ্য থলিতে সমস্যা, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমস্যা এবং বিকলাঙ্গ, এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে দেখা যায় ছোট ছোট বাচ্চাদের। যেসব বাচ্চা হয়তো এখনো দুধ খাওয়া ছাড়েনি সেইসব বাচ্চাদেরও এমন সমস্যা হতে দেখলে খুবই আশ্চর্য লাগে। পৃথিবীর সবকিছু এতটাই বেশি দূষিত হয়ে গেছে যে একটি সদ্যজাত বাচ্চাকেও পৃথিবীতে এসে ভীষণভাবে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়।


আসলেই বর্তমানে আমাদের পরিবেশ , প্রত্যেক ধরনের খাদ্য খাবার, জল, বায়ু, প্রত্যেকটা জিনিস এমন ভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে যে আমাদের শরীর ধীরে ধীরে তার আসল প্রাণ হারিয়ে ফেলছে। যার ফলে অনেক কম বয়স থেকে আমাদের মধ্যে অনেক বেশি রোগ ব্যারাম এবং সমস্যার সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। আর এইসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া এতটাও সহজ কাজ নয়। কারণ এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে আমাদের প্রত্যেককে একত্রিত ভাবে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে এবং পরিবেশের প্রত্যেকটি জিনিসকে বিশুদ্ধ করার চেষ্টায় লেগে পড়তে হবে। বিভিন্ন কীটনাশক বিষ রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা একদমই বন্ধ করতে হবে। কলকারখানা, যানবাহন, এছাড়াও বিভিন্ন জ্বালানি থেকে যেসব দূষিত বায়ু নির্গত হয় সেগুলোর যথার্থ ব্যবস্থা নিতে হবে, পরিবেশ বাঁচাতে প্রচুর পরিমাণে গাছপালা লাগাতে হবে নদী-নালা, পুকুর সংরক্ষণ করতে হবে এবং সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে হবে। খাদ্যদ্রব্য সবসময় বিশুদ্ধভাবে তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে এবং গুণগতমান বজায় রেখে খাঁটি রাখার চেষ্টা করতে হবে। আমরা একত্রে সবাই মিলে চেষ্টা করলে পরিবেশকে অবশ্যই আবার বিশুদ্ধ করা সম্ভব এবং আগের মত ফিরিয়ে সুন্দর একটি পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব। সুন্দর বিশুদ্ধ পৃথিবী তৈরি করতে পারলেই আমরাও বিশুদ্ধ খাবার সহ সবকিছু বিশুদ্ধ পাবো এবং রোগমুক্ত সুন্দর জীবন যাপন করতে পারব।

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

1000047205.jpg

1000047206.jpg

1000047207.jpg

1000047224.jpg

1000047225.jpg

1000047226.jpg

আপনার পোস্টে বর্তমান সময়ের স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত সংকট খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। পরিবেশ দূষণ রোধে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কী করতে পারি—যেমন প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো, গাছ লাগানো, জৈব কৃষিকে সমর্থন করা—এ বিষয়ে কিছু প্র্যাকটিকাল টিপস যোগ করলে আমরা উদ্বুদ্ধ হবো।