'সাজানো সংসার গল্পের নবম পর্ব'

in hive-129948 •  8 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাজানো সংসার গল্পের নবম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের নবম পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-fauxels-3184183 (1).jpg

সোর্স


ভালোই দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল সংসারে কোনরকম অভাব ছিল না। কারণ প্রতিমাসে সংসার চালানোর জন্য প্রদীপ টাকা পাঠাত। কিন্তু হঠাৎ প্রদীপ টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়।কয়েক মাস এমন ভাবে চলতে থাকে তখন রাকেশের মা রাকেশের কাছে এসে রাকেশকে বলে, আমার খুব চিন্তা হচ্ছে তোর ভাই তো এ মাসে ও টাকা পাঠালো না। তুই একটা বার খোঁজ নিয়ে দেখবি ওর কিছু হয়েছে কিনা। রাকেশ বলে, মা তুমি সব সময় একটু বেশি চিন্তা করো। প্রদীপ এখন বড় হয়েছে সে চাকরি করে বাইরে থাকে তার ও তো টাকার দরকার পরে । তার টাকার দরকার হয়েছে তার জন্য হয়তো বাড়িতে টাকা পাঠায়নি। তুমি চিন্তা করো না আমি ওর সাথে কথা বলবো। তার মা চলে যাওয়ার পর রাকেশ চিন্তা করতে থাকে তার ভাইয়ের কিছু হয়েছে কিনা। রাকেশ ফোন করে প্রদীপকে কিন্তু প্রদীপ কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে রাকেশের ফোন উঠাতে পারে না। রাকেশ অনেকবার ট্রাই করার পর প্রদীপকে ফোনে না পেয়ে আরো চিন্তায় পড়ে যায়। সে একবার ভাবতে থাকে সে কাল সকালে প্রদীপ যেখানে থাকে সেখান থেকে ঘুরে আসবে। কিন্তু সমস্যা হল রাকেশ প্রদীপের শহরের ঠিকানা জানেনা।


তিনদিন পর প্রদীপ রাকেশকে ফোন করে। প্রদীপের ফোন পেয়ে রাকেশ বলে, কেমন আছিস তুই? তোকে ফোন করছি ফোন তুললি না কিছু হয়েছে তোর ঠিক আছিস তো? প্রদীপ বলে, আমি ঠিক আছি কি জন্য ফোন করেছ? রাকেশ বলে, কয়েক মাস হল তুই তো বাড়িতে টাকা পাঠাচ্ছিস না তাই মা চিন্তা করছিল কিছু হয়েছে কিনা। প্রদীপ বলে, আমি একটু সমস্যার মধ্যে আছি তাই টাকা পাঠায়নি। রাকেশ বলে, কি সমস্যা হয়েছে আমাকে খুলে বল? প্রদীপ বলে, তেমন কিছু নয় এ মাসে তোমাদের টাকা আমি পাঠিয়ে দিব। রাকেশ বলে, তোমাদের টাকা কেমন কথা বলছিস। তুই কি আমাদের পর করে দিলি তোর কি মনে হয় তোর টাকার জন্য আমরা তোকে ভালোবাসি। প্রদীপ বলে, হতেও পারে তা না হলে আমি কয়েক মাস টাকা পাঠায়নি তার জন্য আমাকে বারবার তোমরা ফোন করছ। রাকেশ বলে, তুই আমাদের ভুল বুঝছিস ভাই। প্রদীপ বলে, আমি তোমার সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না আমার কাজ আছে পরে কথা হবে আর টাকা পাঠিয়ে দিব। প্রদীপের কথা শুনে রাকেশ খুবই কষ্ট পায়। সে মনে মনে ভাবতে থাকে এত কষ্ট করে ওকে মানুষ করলাম আজ ও আমাকে এই পুরস্কার দিল।


রাকেশ বাড়িতে আসতেই তার মা রাকেশের মুখ দেখে বলে কি হয়েছে তোর? রাকেশ বলে, কিছু হয়নি মা। মা বলে, আমি তোর মা আমার কাছ থেকে কোন কিছু লুকাস না বল আমাকে কি হয়েছে মুখটা এত ভার কেন? প্রদীপের সঙ্গে কথা হয়েছে তোর? প্রদীপের কিছু হয়েছে? রাকেশ বলে, আজ প্রদীপের সঙ্গে কথা হয়েছে খুব ভালো আছে কিন্তু একটু সমস্যার মধ্যে আছে আমাকে বলতে চাইলো না। মা বলে, টাকার ব্যাপারে কিছু বলেছে কি? রাকেশ বলে, হ্যাঁ মা একটু সমস্যার মধ্যে ছিল তাই টাকা পাঠাতে পারিনি আমাকে বলেছে খুব শীঘ্রই টাকা পাঠাবে। তুমি আমাকে কিছু খেতে দাও খুব ক্ষুধা লেগেছে। এই বলে প্রদীপ তার রুমে চলে যায়। রুমে যেতেই তার বউ লক্ষ্মী তাকে বলে, কি হয়েছে গো তোমার? মুখটা এত ভার করে রেখেছো কেন? রাকেশ বলে, কিছু হয়নি। লক্ষী বলে, কিছুতো হয়েছে আমাকে খুলে বলো। রাকেশ তখন লক্ষ্মীকে সব ঘটনা খুলে বলে। সব কথা শুনে লক্ষ্মী বলে, আমি জানতাম এমন কিছু একটা হবে। তুমি তো আমার কথা কিছুই শোনো না। তুমি গ্রামের মানুষ আর তোমার ভাই শহরে পড়াশোনা করেছে চাকরি করছে। তোমার আর তোমার ভাইয়ের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান। তুমি আমার কথা শুনে তোমার ভাইকে বাড়িতে আসতে বল। এখন সময় হয়েছে ওর সবকিছু জানার। রাকেশ বলে, তুমি ঠিক বলেছ ওকে সবটা বললে ও ঠিকই বুঝতে পারবে আর আমাকে ভুল বুঝবে না।

আজ গল্পের পর্বটি এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

গল্পটা খুবই বাস্তব আর হৃদয় ছোঁয়া।
ভাইয়ের ভুল বোঝাবুঝি আর পরিবারের টানাপোড়েন খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
শেষে একটি শিক্ষাও ছিল — সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে দরকার শুধু খোলা মন আর ভালোবাসা।