'সাজানো সংসার গল্পের ষষ্ঠ পর্ব'

in hive-129948 •  2 months ago  (edited)

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাজানো সংসার গল্পের ষষ্ঠ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের ষষ্ঠ পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-fauxels-3184183.jpg

সোর্স

প্রদীপ একদিন কলেজ শেষ করে বাড়িতে ফিরতে অনেক দেরি করে।প্রদীপের বাড়ির সবাই দুশ্চিন্তা করতে থাকে। রাকেশ বাড়িতে ফিরে প্রদীপকে ডাক দেয় তখন তার মা বলে, প্রদীপ এখনো কলেজ থেকে বাড়িতে আসেনি। রাকেশ এটি শোনার পর তার মাকে বলে, এমন তো কোনদিন হয়নি কলেজ তো অনেক আগেই ছুটি হয়ে গিয়েছে। তখন মা বলে, তুই একবার এগিয়ে দেখবি কোন সমস্যা হয়েছে কিনা। রাকেশ বলে, মা তুমি দুশ্চিন্তা করো না প্রদীপ বড় হয়েছে আর কলেজে অনেক বন্ধু হয়েছে হয়তোবা কলেজ ছুটির পর কোথাও ঘুরতে গিয়েছে ও সঠিক বাড়িতে চলে আসবে। তুমি আমাকে কিছু খেতে দাও খুব ক্ষুধা লেগেছে মা। রাকেশ কে তার মা খেতে দেয় কিন্তু মায়ের মন প্রদীপের জন্য ছটফট করছিল। তখন মা রাকেশকে বলে,তুই খাওয়া দাওয়া শেষ করে একবার দেখে আয় সন্ধ্যা হতে গেল এখনো প্রদীপ এলো না। রাকেশ বলে, ঠিক আছে মা খাওয়া শেষ করে আমি যাচ্ছি।


খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রাকেশ কাঁধে একটি গামছা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে তখন দেখতে পায় প্রদীপ বাড়িতে আসছে। রাকেশ মাকে ডাক দিয়ে বলে, ওই যে তোমার ছেলে কলেজ থেকে ফিরলো। প্রদীপ আসতেই তার মা প্রদীপকে বলে, আজও তো দেরি করলি যে? প্রদীপ বলে, কলেজে আমার এক বন্ধুর জন্মদিন ছিল কলেজ শেষ করে আমি ওখানে গিয়েছিলাম। তখন মা বলে, একটা বার তো খবর দিতে পারতিস আমি কত চিন্তা করছি। তখন প্রদীপ বলে, কি করে খবর দিব আমার তো একটা ফোনও নাই। কলেজে আমার বন্ধুদের সবার ফোন আছে শুধুমাত্র আমার নাই ।তখন রাকেশ বলে, তোর ফোন লাগবে আমাকে তো একটা বার বলতে পারতিস।তখন প্রদীপ বলে,সব কথা বলতে ইচ্ছা করে না। রাকেশ বলে, তুই যদি আমাকে না বলিস আমি বুঝবো কি করে তখন ।প্রদীপ বলে, তুমি তো আমার দাদা ছোট ভাইয়ের কখন কি প্রয়োজন সেটা তোমার দেখা উচিত। আর আমি এখন বড় হয়েছি কলেজে পড়ি সব কথা তোমাকে বলা যায় না।


তখন মা বলে, তুই তোর দাদার সাথে কিভাবে কথা বলছিস। তখন রাকেশ বলে ,মা তুমি চুপ কর ও তো ঠিকই বলেছে ও এখন বড় হয়েছে সব কথা বলা যায় না।আমিই তো ভুল করেছি আমার ছোট ভাই কলেজে পড়ে তার বন্ধুরা ফোন ব্যবহার করে আমি এখনো তাকে একটা ফোন দিতে পারিনি। ও যদি ফোন না থাকে সবার সাথে মিশবে কি করে। রাকেশ প্রদীপকে বলে, কাল সকালে তোকে ফোনের দোকানে নিয়ে যাব। তোর যেটা ভালো লাগে সেই ফোনটি কিনে দেব এখন হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নে। তখন প্রদীপ বলে, আমার ক্ষুধা নাই। মা বলে, কেন? প্রদীপ বলে, জন্মদিনে খাওয়া-দাওয়া করে এসেছি। এই বলে প্রদীপ তার রুমে চলে যায়।তখন মা রাকেশকে বলে, কলেজে যাওয়ার পর প্রদীপ একটু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। রাকেশ বলে, না মা তুমি ভুল ভাবছো কলেজে পড়ে সবার সাথে মেলামেশা করতে গেলে একটু তো পরিবর্তন হতেই হয়। তুমি এ নিয়ে শুধু শুধু চিন্তা করো না। মা তখন বলে, তুই যে প্রদীপ কে বললি ওকে ফোন কিনে দিবি কিন্তু সেটি কিনতে তো অনেক টাকা। রাকেশ হেসে দিয়ে বলে, যত টাকাই হোক না কেন ও যখন চেয়েছে আমি ওকে কিনে দিবো।


সকাল হতেই রাকেশ প্রদীপকে নিয়ে শহরে একটি ফোনের দোকানে যায়। সেখানে যেয়ে ভালো একটি ফোন প্রদীপকে কিনে দেয়। ফোনটি পেয়ে প্রদীপ খুবই খুশি হয়। প্রদীপ নতুন ফোন নিয়ে কলেজে তার ভাই বন্ধুকে দেখায় তার ভাই বন্ধু প্রদীপকে বলে নতুন ফোন কিনেছিস আমাদেরকে খেতে দিতে হবে। বন্ধুদের কথা প্রদীপ ফেলতে পারেনা। প্রদীপ বলে, কাল আমি তোদের খাওয়াবো কলেজ শেষ করে প্রদীপ বাড়িতে এসে দাদার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে প্রদীপ রাকেশকে বলে, দাদা আমার কিছু টাকা লাগবে? রাকেশ বলে,কত টাকা লাগবে? প্রদীপ বলে, দু হাজার টাকা দিলেই হবে। রাকেশ বলে, ২০০০ টাকা কেন লাগবে? প্রদীপ বলে, নতুন ফোন কিনেছি কলেজের বন্ধুরা খেতে চেয়েছে আমি কথা দিয়েছি ওদেরকে আমি খাওয়াবো। রাকেশ বলে, ঠিক আছে কিন্তু একটা কথা অতিরিক্ত টাকা খরচ করিস না তুই তো জানিস আমাদের অভাবের সংসার। প্রদীপ বলে, আমি জানি তুমি চিন্তা করো না আমি যখন চাকরি পাব তখন আমাদের আর অভাব থাকবে না।

আজ গল্পের পর্বটি এখানেই শেষ করছি। সবাই খুব ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

好久没和朋友们聚了