'সাজানো সংসার গল্পের সপ্তম পর্ব'

in hive-129948 •  last month 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাজানো সংসার গল্পের সপ্তম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের সপ্তম পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-fauxels-3184183.jpg
সোর্স


প্রদীপ কে ফোন কিনে দেওয়ার পর থেকে প্রদীপের ভেতর পরিবর্তন আসতে লাগে। সে এখন আর ঠিক মত সময় তার পরিবারকে দেয় না। এই সবকিছু তার মা বেশ কয়েকদিন ধরে দেখে আসছিল। একদিন তার মা রাকেশকে বলে, তোকে একটা কথা বলার ছিল? রাকেশ বলে কি কথা মা? মা বলে, কিছুদিন ধরে দেখছি তোর ছোট ভাইয়ের ভেতর অনেক পরিবর্তন এসেছে। রাকেশ বলে, পরিবর্তন তো আসবে কারণ ও এখন কলেজে পড়ছে। মা বলে, তুই যা বলছিস আমি মানছি কিন্তু আমার মনে হয় তোর ভাই খারাপ পথে পা দিয়েছে। রাকেশ বলে, এসব তুমি কি বলছো প্রদীপ এমন ছেলে না। মা বলে, মায়ের চোখ ফাঁকি দেওয়া যায় না। তুই একটু প্রদীপের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দেখ। রাকেশ বলে, আচ্ছা মা আমি খোঁজ নিব তুমি এখন চিন্তা না করে ঘুমিয়ে পড়ো।


রাকেশ মায়ের কথাগুলো শুনে চিন্তায় পড়ে যায়। সে ভাবে প্রদীপের কাছে সরাসরি জিজ্ঞাসা করবে। তাই সে চলে যায় প্রদীপের রুমে প্রদীপকে ডাকার জন্য কিন্তু যে দেখে রুমে প্রদীপ নাই। রাকেশ ভাবতে থাকে এত রাতে প্রদীপ কোথায় গেল। রাকেশ সঙ্গে সঙ্গে প্রদীপকে ফোন দেয় কিন্তু প্রদীপের ফোন ব্যস্ত পায়। রাকেশ প্রদীপের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে অনেকক্ষণ পর প্রদীপ রুমে আসে। প্রদীপ রুমে ঢুকতেই দেখে তার বিছানার উপর রাকেশ বসে রয়েছে। প্রদীপ বলে, দাদা তুমি এত রাতে না ঘুমিয়ে এখানে বসে আছো? তখন রাকেশ বলে, হ্যাঁ তোর সঙ্গে কিছু কথা ছিল কিন্তু আগে বল তুই এত রাতে কোথায় গিয়েছিলি? প্রদীপ বলে, কোথাও না ঘুম আসছিল না তাই বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। রাকেশ বলে, আমিতো বাইরে তোকে খুজলাম কোথাও তো পেলাম না। প্রদীপ বলে, বাড়ির বাইরে হেঁটে বেড়াচ্ছিলাম কেনো কি হয়েছে? রাকেশ বলে, তুই আমার কাছ থেকে কোন কিছু লুকাচ্ছিস না তো? আমি তোর দাদা তুই আমাকে সব বলতে পারিস। প্রদীপ বলে, আমি আবার তোমার কাছ থেকে কোন কথা লুকালাম। এমন কোন কথা নেই যেটা তুমি জানো না। রাকেশ কথা না বাড়িয়ে প্রদীপ কে বলে, আচ্ছা ঠিক আছে অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়।


পরের দিন প্রদীপের কলেজ ছুটি ছিল।তাই তারা সবাই মিলে সকালে খাবার খাচ্ছিল তখনই প্রদীপের ফোনে ফোন আসে। ফোন আসতেই প্রদীপ খাবার ছেড়ে উঠে পড়ে। তখন রাকেশ বলে, কি হলো খাবার ছেড়ে উঠে পড়লি যে? প্রদীপ বলে, আমার এখনই একটু বাইরে যেতে হবে পরে এসে খেয়ে নেব। রাকেশ বলে, কারো কিছু হয়েছে? প্রদীপ বলে, না দাদা চিন্তা করো না আমি যাব আর আসব। প্রদীপ এই বলে সে রেডি হয়ে বাইরে চলে যায়। তখন তার মা রাকেশ কে বলে, আমি তোকে বলেছিলাম ও অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। ইদানিং ওর ফোনে ফোন আসে অনেকক্ষণ কথা বলে তারপর কাউকে কিছু না বলে বাইরে বেরিয়ে পড়ে। রাকেশ বলে, তুমি চিন্তা করো না মা এ বয়সে এমন একটু হয়ে থাকে। মা বলে, আমি সবই বুঝি কিন্তু আমার মন মানছে না তুই যা ওর পিছু পিছু দেখ ও কি করে। রাকেশ বলে, আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যখন আমার কথা শুনবেই না তখন আমি যাচ্ছি।


রাকেশ ও বেরিয়ে পড়ে প্রদীপের পিছু পিছু। প্রদীপ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল তখন একটি গাড়ি আসে আর সেই গাড়িতে প্রদীপ উঠে পড়ে। রাকেশ এটি দূর থেকেই দেখতে পায় সঙ্গে সঙ্গে সে একটি বাইক নিয়ে তাদের পিছু নিতে শুরু করে। কিছুদূর যেতেই গাড়িটি একটি বাড়ির সামনে থামে গাড়ি থেকে দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে বের হয় সঙ্গে প্রদীপ ও রয়েছে। তারা সবাই বাড়ির ভিতর ঢুকে যায়। রাকেশ তার পরপর সেই বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে। রাকেশ হঠাৎ এমন একটি বিষয় চোখের সামনে দেখতে পায় যেটি দেখার জন্য রাকেশ মোটেও প্রস্তুত ছিল না। রাকেশ দেখতে পায় প্রদীপ নেশা করছে। রাকেশ এটি দেখার পর সে মাটিতে বসে পড়ে সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। রাকেশ সেখান থেকে চলে আসে আর ভাবতে থাকে তার ভাই তার রক্ত জল করা টাকা দিয়ে নেশা করছে। সে ভাবতে থাকে সে তার মাকে বাড়িতে ফিরে কি বলবে। মা যদি এটা জানতে পারে তাহলে খুবই কষ্ট পাবে। তাই সে ভাবে তার মাকে সে কিছুই জানাবে না।

আজ গল্পের পরবর্তী এখানে শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!