হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাজানো সংসার গল্পের অষ্টম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের অষ্টম পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
সেদিনের পর থেকে প্রদীপের বাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার পরিমাণটা বেড়ে যায়। তার দাদা রাকেশ সবটাই জানতো কিন্তু মুখ বুজে সবকিছু মেনে নিত। তার মা অনেকটা বার রাকেশকে বলেছে কিন্তু রাকেশ জানে এত টাকা নিয়ে প্রদীপ কি করছে। কিন্তু মা জানলে কষ্ট পাবে তার জন্য রাকেশ মুখ ফুটে কিছুই বলতে পারে না। এইভাবে চলতে লাগে তাদের দিনগুলো। কয়েক বছর পর প্রদীপ কলেজ পাস করে। এই কয়েক বছরের মধ্যে রাকেশ বিবাহ করে এখন রাকেশের সংসার জ্বালাতে অনেকটাই কষ্ট হয়ে যায়। প্রদীপ কলেজ পাশ করার পর বাড়িতেই থাকতো প্রদীপ। একদিন রাকেশ প্রদীপকে বলে, পড়াশোনা তো শেষ হয়েছে বাড়িতে বসে না থেকে চাকরি খোঁজার চেষ্টা করতিস। সংসারে তুই একটু সাহায্য না করলে ভালো হতো আমি যে আর পারছি না। তখন প্রদীপ রাকেশকে বলে,আমি বুঝতে পারছি তোমার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু চিন্তা করো না খুব শীঘ্রই আমি চাকরি পেয়ে যাব। প্রদীপ চাকরির জন্য পথে পথে ঘুরতে থাকে কিন্তু কোথাও চাকরির সন্ধান পায় না। যেখানেই যায় সেখানে টাকার দাবি করে আর টাকার পরিমাণ এতটাই ছিল যে প্রদীপের পক্ষে সেটা দেওয়া সম্ভব নয়।
একদিন প্রদীপ ঘরের ভিতর মন খারাপ করে একা একা বসে ছিল। তখন রাকেশ তার কাছে এসে প্রদীপকে বলে, কি হয়েছে মন খারাপ করে কেন বসে রয়েছিস? তখন প্রদীপ বলে, দাদা আমার পক্ষে চাকরি করার সম্ভব নয়। রাকেশ বলে, কেন কি হয়েছে? প্রদীপ বলে, এখন আর যোগ্যতায় চাকরি হয় না এখন টাকার প্রয়োজন হয়। আমি অনেক জায়গায় চাকরির জন্য গিয়েছি সব জায়গাতে আমার কাছে টাকা চেয়েছে। তারা এত টাকা চেয়েছে যেটা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। আমার দ্বারা চাকরি হবে না দাদা কাল থেকে তোমার সঙ্গে কাজে বের হব। তখন রাকেশ বলে, এত কষ্ট করে আমি তোকে পড়াশোনা করিয়েছি। আমি কত স্বপ্ন দেখেছি তুই চাকরি করবি বড় অফিসার হবি।আমি গর্ব করে সবাইকে বলতে পারব আমার ভাই বড় অফিসার। প্রদীপ বলে, দাদা সব স্বপ্ন সত্যি হয় না কিছু স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। রাকেশ বলে, স্বপ্ন আমি দেখেছি আর এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমার যা করার প্রয়োজন আমি তাই করবো। প্রদীপ বলে, তুমি কি বলছো আমি বুঝতে পারছি না? রাকেশ বলে, তুই কোন চিন্তা করিস না চাকরি করতে যত টাকার প্রয়োজন আমি তোকে দিব। প্রদীপ বলে, এত টাকা তুমি কোথায় পাবে? রাকেশ বলে, তা নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না তুই চাকরি করবি এটা তোর মাথায় রাখ।
প্রদীপ তার দাদার মুখে কথাগুলো শোনার পর তার মনটা একটু ভালো হয়ে যায়। পরের দিন সে আবারো চাকরি খোঁজার জন্য বের হয়। একটি কোম্পানিতে তার চাকরি হয় কিন্তু সেখানে চাকরির জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করে। প্রদীপ টাকাগুলো দেওয়ার জন্য রাজি হয়। এরপর প্রদীপ বাড়িতে এসে তার দাদাকে সবটা জানায়। তার দাদা বলে, চিন্তা করিস না তিন লাখ টাকা আমি তোকে দুদিনের ভিতর তোর হাতে তুলে দিব। দুই দিনের মাথায় রাকেশ প্রদীপের হাতে তিন লাখ টাকা তুলে দেয়। প্রদীপ সেই টাকাগুলো নিয়ে কোম্পানির হাতে তুলে দেয় পরবর্তীতে কোম্পানির প্রদীপকে একটি ভালো পোস্টে চাকরি দেয়। প্রদীপ চাকরি পেয়ে পরিবারের সবাইকে মিষ্টিমুখ করায়। আর পরবর্তীতে সে চাকরি করার জন্য শহরে চলে যায়। প্রতিমাসে ৩০০০০ টাকার মতন বাড়িতে পাঠাতো। এতে করে তার পরিবারের ভালোভাবেই দিনগুলো চলে যাচ্ছিল। প্রদীপের চাকরির পর রাকেশের ও সংসার চালাতে কষ্ট কম হলো। রাকেশ সবাইকে গর্ব করে বলতে শুরু করলো তার ভাই বড় চাকরি করে আর প্রতিমাসে তার ভাই সংসার চালাতে টাকা পাঠায়।