বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি।
হসপিটাল থেকে বাসায় ফেরার পর এখন পর্যন্ত শরীর পুরোপুরি ঠিক হয়নি, খুবই দুর্বল, উঠে দাঁড়াতে পারি না।তবে আজকে মোটামুটি বেশ ভালো ফিল করছি।যাইহোক আজকে বাকিটুকু শেয়ার করবো আপনাদের মাঝে।কিছুই খেতে পারছিলাম না, শুধু এনার্জি ড্রিঙ্কস আর পানি খাচ্ছিলাম। কিন্তু ড্রিংকস খাওয়ার পরও বমি হয়ে যাচ্ছিল, আর পেটে অসহ্য ব্যথা এবং টয়লেটে হচ্ছিল না।টয়লেট কিভাবে হবে কারণ ৭-৮ দিন না খাওয়াছিলাম, কিছুই খেতে পারতাম না।মনে হচ্ছিল পেট যেন দিনে দিনে ফুলে যাচ্ছিল, একদিকে অপারেশনের ব্যথা, অন্যদিকে পেটের যন্ত্রণা।এরপর পেটের এই যন্ত্রণা কমানোর জন্য তারা আমার নাকের মধ্য দিয়ে পাইপ ঢুকিয়ে দিল পেটের মধ্য থেকে পানি বের করার জন্য, সাথে দিল অক্সিজেন কি যে কষ্ট তখন হচ্ছিল তা আর বলে বোঝাতে পারবো না।আমার তখন মনে হচ্ছিল আর বাঁচবো না।এভাবে একটানা তিন থেকে চার দিন পাইপ দিয়ে রেখেছিল।এরপর পাইপ দিয়ে যখন পেট থেকে আজেবাজে জিনিস বের করছিল তখন মোটামুটি বেশ ভালই লাগছিল, ব্যথাটা তখন বেশ কমেছিল।খাওয়া-দাওয়া তখন বন্ধ ছিল, স্যালাইন এর মাধ্যমে চলত সবকিছু।হসপিটালে বেশিরভাগ সময় কান্নাকাটি করেছি। এরপর আশপাশের লোকজন আমাকে জিজ্ঞাসা করছিল এখন বেটার ফিল করছি নাকি? তখন আমি একটু হেসে দিয়েছিলাম, তখন সবাই বলছিলে অ্যাটলাস্ট আমার মুখে তারা একটু হাসি দেখতে পেল।
ওই মুহূর্তে আমার এই অবস্থা দেখে আমার আত্মীয়-স্বজন সকলেই ভয় পেয়ে গিয়েছিল।ভিডিও কলে তারা আমার এই চেহারা দেখে সকলেই কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিল।অন্যদিকে হাজব্যান্ড বাংলাদেশে গরু মানত করা, মসজিদ, মাদ্রাসায় এতিমখানার বাচ্চাদেরকে দিয়ে দোয়া করা, নানা রকম কার্যক্রম চালাতে থাকেন।আমার অবস্থা তখন খুবই সিরিয়াস ছিল।বেশিরভাগ সময়ই হসপিটালে একা একাই থাকতে হয়েছে।ওই সময় নিজের আপন মানুষ কাছে থাকলে বেশ ভালো লাগে।কিন্তু হাজব্যান্ড একা মানুষ চারিদিকে সময় দিতে পারছিল না।ঘর সামলানো, বাচ্চাদেরকে সামলানো আবার রেস্টুরেন্টেও যেতে হতো মহাসমুদ্রে পড়ে গিয়েছিল।সকালে ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাদের নাস্তা দেওয়া, স্কুলের লাঞ্চ রেডি করে দেওয়া, এরপর তাদের চুল বাধা নিয়ে পড়ে গিয়েছিল মহাবিপদে। কোনদিনও এই কাজগুলো সে এর আগে করেনি। এছাড়া রান্না করতে হয়েছে, কিন্তু প্রবলেম হলো বাচ্চারা সব সময় আমার রান্না খেতে অভ্যস্ত, বাবার রান্না খেতে একটু কষ্ট হয়েছে।তারপরও খেয়েছে আর বলেছে মজা হয়েছে, বাবাকে কষ্ট দিতে চায়নি।
যে চার দিন নাকের ভেতর নল দিয়ে রেখেছিল সে চার দিন পেটের ব্যথায় একটু কম ছিল, কিন্তু কাটা জায়গায় যথেষ্ট ব্যথা ছিল বারবার পেইন কিলার ও মরফিন দিচ্ছিল কমানোর জন্য।এরপর নাকের পাইপ খুলে ফেলল আর বলল এখন থেকে একটু একটু করে সবকিছুই খেতে পারব।হাসব্যান্ড বাসায় থেকে স্যুপ, ভেজিটেবলস দিয়ে নরম খিচুড়ি মতো বানিয়ে আনতো কিন্তু তখনো কিছুই খেতে পারতাম না, শুধু মাত্র ফলমূল কিছু খেতে পারতাম।এরপর ১৩ দিন পর বললো বাসায় যেতে পারব কিন্তু তখনো ব্যাথা ছিল, পুরোপুরি ঠিক হয়নি।তখন তারা বললো একটু সময় লাগবে পুরো ঠিক হতে, পাওয়ারফুল কিছু ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি এতে ব্যাথা কন্ট্রোল হবে। এছাড়া সাথে দিয়ে দিল এক কার্টুন এনার্জি ড্রিংক।
এরপর হসপিটাল থেকে বাসায় ফিরে টানা ১৩ দিন পর মুখে একটু ভাত দিতে পেরেছি।খেতে পেরেছি, এ কয়েকদিন খুবই দুর্বল ছিলাম মোটেও উঠে দাঁড়াতে পারতাম না।আজ বেশ ভালো অনুভূত হচ্ছে।আমার জন্য দোয়া করবেন যেন দ্রুত ঠিক হয়ে যাই। আর আগামী সপ্তাহের সেকেন্ড উইকে বাংলাদেশে যাওয়ার কথা। আশা করি যেতে পারবো।বন্ধুরা এটিই ছিল আমার অপারেশন থেকে হসপিটালে কাটানো দিনগুলোর বর্ণনা।
Photographer | @tangera |
---|---|
Device | I phone 15 Pro Max |
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
[

১৩ দিন পর খাবার খেতে পেরেছেন এটা সত্যি অনেক কষ্টের ব্যাপার। আসলে এরকম পরিস্থিতিতে একা একা ভাইয়া সবকিছু সামলেছে এটা ভেবেই তো খারাপ লাগছে। উনার খুবই কষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে যেন আর কখনো অসুস্থ না করেন এই দোয়াই করি আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুবই কষ্টে দিনগুলো পার করেছেন আপু। আসলে এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়বেন, সেটা তো কখনোই ভাবেননি। আসলে আমাদের জীবনে কখন কি ঘটে যায়, সেটা কেউ বলতে পারে না। যাইহোক দোয়া করি দ্রুত ঠিক হয়ে যান। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়ার বেশ কস্ট হয়েছে বা্সা,হসপিটাল ও ব্যবসা সামলাতে। তবুও তিনি সব কিছুই সামলিয়েছেন। এখন সুস্থ্য আছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। আর বেশি ভালো লাগলো এটা জেনে যে আপনি শিডিউল টাইমেই দেশে আসতে পারবেন। দেশের সবার সাথে অনেক ভালো সময় কাটাবেন আশাকরি। অনেক অনেক দোয়া আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিপদের সময় হাসবেন্ডের সাপোর্ট ভীষণ দরকার।আর যেহেতু দেশের বাইরে। ভাইয়া যথেষ্ট ই করেছেন।আপনি এখন সুস্থতা অনুভব করছেন জেনে ভালো লাগছে আপু।দোয়া করি পরিবার পরিজন নিয়ে সুস্থ জীবন আল্লাহ দান করবেন,আমিন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit